ঈদের মাঠে অনুচিত ব্যবহার এবং কিছু জ্ঞান বিতরণ (সম্পুর্ন পোস্ট)
ঈদের মাঠে অনুচিত ব্যবহার এবং কিছু জ্ঞান বিতরণ (সম্পুর্ন পোস্ট)
আসসালামু আলাইকুম,
রমজানের রোজার ঈদ গেল,সামনেই কুরবানির ঈদ। গত ঈদে যা দেখলাম- আবার না দেখতে হয়।
আমরা টিভি তে বা খেলার মাঠ পর্যন্ত গিয়ে বিভিন্ন খেলা দেখি ১-৩ ঘণ্টা ব্যাপী, তা সামান্য সময় মাত্র, আর নামাজ একটু ১ মিনিট লম্বা হইলে অথবা নামাজ শুরু ১ মিনিট দেরী হইলেই উফ, সময় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে - এরকম কাহিনী আমাদের অনেকেই করেন, যা জুম্মাহ নামাজ, বা সাধারণ ৫ ওয়াক্ত নামাজেও দেখা যায়। এটা করা ঠিক নয়, ইমাম এর উপর কখনওই কথা বলা অনুচিত নয়।
আজ একটি বাস্তব ঘটনা বলবো যা আমার নিজে অনেকবার দেখা । বলছিলাম করোনা ভাইরাস এর ফলে ঈদের নামাজে জামাত, ও সময় নিয়ে গোলযোগ বিষয়ে। একজন টু,থ্রী এর ছাত্র যদি এরকম বোকামির কাজ করে তা মেনে নেওয়া সম্ভব। কিন্তু আফসোস, শিশু রা এই ধরণের বোকামি বা ভুল করে না। সেই ভুল টা করলো উচ্চশিক্ষিত ও চাকুরীজীবী এক জন ভদ্রলোক!
ঘটনা টা শুনুন তাহলে- ঘটনা শুরুর আগে পরিবেশ টা বললে একবারে ক্লিয়ার হবে -
চারিদিকে মহামারীর জন্য প্রশাসন এর পক্ষ থেকে রোজার ঈদের নামাজের জামাতে কি কি ধরণের সতর্কতা বলবত হয় তা নিশ্চয় ই সবাই জানেন। যেমন -
১। মসজিদের বাহিরে নামাজ আদায় করা যাবেনা। সকল জামাত মসজিদের ভিতর হবে এবং সকল মসজিদে হবে ।
২। মসজিদের খোলা ছাদেও নামাজ আদায় করা যাবেনা ।
৩। মসজিদে ব্যক্তিগত জায়নামাজ নিয়ে যেতে হবে।
৪। মসজিদে ঢুকার পূর্বে হাত ধুয়ে ঢুকতে হবে।
৫। কেউ গায়ে লেগে দাড়াতে পারবেনা।
এই যখন অবস্থা, কোন এলাকায় মানুষ এক মসজিদে ধরে যাবে এমন নয়। তাই বলে নিশ্চয় ই একই মসজিদে দ্বিগুণ মানুষ ঢুকা ঠিক নয়।
সোজা সমাধান- ২য় জামায়াত করা। এখন নামাজের জামাতের সময় ছিল সকাল ৮ টা ৩০ মিনিটে। আর সকাল ৮ঃ০০ টার ভেতর মসজিদ পুর্ণ হয়ে গেছে।
এখন, একা একা ইমাম নিজে কোন সিদ্ধান্ত নেন নি, বরং সামনে থাকা অন্যান্য মুসল্লি দের বলেন "৮ঃ৩০ মিনিটে দ্বিতীয় জামাত করার মত ইমাম আছেন। আমরা যদি ৮ টা ৩০ মিনিটে জামাত আদায় করি তাহলে এখন মসজিদের বাহিরে লোক দাড়িয়ে থাকবে ৫০ জনের বেশী। তাতেও প্রশাষনের চাপ। আবার এখন সবাই মসজিদেও আর বেশি ঢুকানো যাবেনা। তাই ৮ঃ১০ মিনিটে নামাজ আদায় করে নেই।"
আল্লাহর রহমতে মসজিদের সবাই একমত। একদম একবাক্যে সবাই ই একমত হলেন ।
কিন্তু মাত্র ১ জন ভদ্র লোক বাধ সাধলেন।
সেই ভদ্রলোক প্রায় আরও ১০ মিনিট একাই ইমামের সাথে বকাঝকা করতে লাগলেন। মসজিদের সবাই এবার উক্ত ভদ্র লোক কে বুঝাতে লাগলেন। তাতেও তিনি বুঝবেন না। তার দাবি, কেন এই সময় পরিবর্তন হবে তা শূনবোনা,সময় ৮ঃঃ৩০ যা বলা হয়েছে তখন ই নামাজ হবে।
আশা করি পাঠক সমাজ ক্লিয়ার যে ভদ্র লোকের ভুল ২ স্থানে। ১ তিনি জানেন না ইমামের গুরুত্ব ও নামাজের ওয়াক্তের বিষয়। ২ তিনি জানেন না মসজিদে সব মুসল্লি যেখানে একমত হয়ে দাড়িয়ে গেছেন জামাতের জন্য সেখানে ভদ্রলোক টা কিছু জানুক না জানুক সাধারণ জ্ঞান থেকে চুপ থাকা উচিত ছিলো। আমি সেই ভদ্র লোকের কোন ধরণের নমুনা এখানে পেশ করবোনা, কেননা কোন ব্যক্তির সমালোচনা নয় , ভুল কাজের সমালোচনা ই আমাদের উদ্দেশ্য যাতে এই ভুল আর কেহ না করেন।
এবার আসি নামাজ এর ওয়াক্তের আর ঘড়ির সময়ের ব্যাপারে। আমাদের জানতে হবে যে - কোন ক্যালেন্ডার বা ঘড়ির সময়ে নামাজ ফরজ নয় , নামাজ ফরজ ওয়াক্ত মোতাবেক , আগে ঘড়ী ছিলোনা , মানুষ আজান শুনে মসজিদে আসতেন, মসজিদ পুর্ণ হইলেই ইমাম নামাজ পড়াতেন, ইমাম কয় মিনিট দেরী করলেন বা কয় মিনিট আগে দাঁড়ালেন তা কেউ টের পেতনা, তাই ইমামের উপর কেউ মাতব্বরিও করতনা। আসলে এসব ঘড়ী আমাদের নামাজে আসতে সহায়ক মাত্র। ৮ঃ৩০ ই নির্ধারিত নয়, এসব শুধুমাত্র সহায়ক, আর এতে সাওয়াব বা পাপের কিছু নয়। বরং ইমাম যখন বলেন তার আনুগত্য /মেনে নেওয়াই সাওয়াব। নামাযের আগে তো নিয়্যত ঠিক করতে হয় - এই ইমামের পিছনে ইক্তিদা করছি । তা না হলে নামাজ হবেনা।
তাছাড়া সহীহ হাদীস থেকে জানা যায়, নামাজের আগে যতক্ষন বান্দাহ অপেক্ষা করে,তা নামাজের ভিতরেই গন্য হয়।
এজন্য হয়তো শয়তান মানুষের মনে জালা উঠিয়ে দেয়। আর নামাজের মধ্যে থেকে কেউ তর্ক বিতর্ক করতে পারে? মসজিদে জোরে কথা বলা ও আদবের খিলাফ। আর ইমামের সম্মান না জানলে কি করার আছে। আল্লাহ আমাদের সহিহ বুঝ দান কিরুন,সহীহ আমলের তাওফিক দান করুন। আমিন।
# মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয়। আমার এই লেখায় কেউ কোন বানান ভুল,শব্দে ভুল ইত্যাদি পেলে দয়া করে কমেন্টে জানাবেন।আমি ঠিক করে নিবো ও কৃতজ্ঞ থাকবো। ইনশাআল্লাহ।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন