আবারো দেখা হল 'শক্তের ভক্ত নরমের যমে'র সাথে - রিক্সা যাতায়াত ও কাঁচা বাজার সমাচার
আসসালামু আলাইকুম। সচরাচর দেখা যায় শক্তের ভক্ত নরমের যম এর মেলা। নরম দেখলেই কেন জানো হিংস্র বাঘের মত পা এর ভেতর থেকে লম্বা লম্বা নখ বেরিয়ে আসে। আবার শক্ত দেখলেই কিভাবে যেন সেই লম্বা নখ গুলো আস্তে করে পায়ের ভিতরে ঢুকে যায়.
বলছিলাম মাঝে মাঝে দেখা যায় যে ব্যবহারটা করা হয় গরিব সবজি বিক্রেতা, রিকশাচালক, অথবা কুলি মজুর এর সাথে।
বেচারা সবজিওয়ালা, সম্ভবত সে কোন জায়গা থেকে তাহা কিনে নিয়ে এসেছে ক্রয় মূল্যের চেয়ে ৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি করে নিজের খরচ বহন করবে। অন্যথায় নিজের বাড়ি থেকে খরচ করে উৎপাদিত সবজি বাজারে নিয়ে আসছে। শিরোনামে কতিপয় ভদ্র(!) সমাজ তার নির্ধারিত বিক্রয় মূল্যের চেয়ে ৫ টাকা কম দেওয়ার জন্য তার সাথে অসামান্য খারাপ ব্যবহার করেন। অথচ এই ভদ্রলোক যখন কোন হোটেল বা রেস্টুরেন্টে ঢুকেন, সেখানে এক হাজার টাকার উপরে হয়, ২০০০টাকার উপরে হয়, তখন তিনি সেখানে কখনোই পাঁচ টাকা দশ টাকা কম নেওয়ার কথা ভুলেও বলেন না। কারণ জায়গাটা তো শক্ত।
গত সপ্তাহে আমার সামনে দিয়ে একজন বাজার থেকে একটি গ্যাসের সিলিন্ডার ক্রয় করে বাসায় নিয়ে আসলো (বাসা হতে বাজার প্রায় দুই কিলোমিটার দূর হবে), সাধারণভাবে একজন মানুষের ভাড়া ১০ টাকার উপরে যাওয়া উচিত যেহেতু সে রিকশায় আসছে । তারপরেও ২৫ কেজি ওজনের গ্যাসের সিলিন্ডার। অতি চালাক মানুষ যেহেতু শিক্ষিত ভদ্র (!) তিনি রিক্সায় উঠার আগে ভাড়া জিজ্ঞাসা করেন নাই তারা ঠিক করে নেন নাই। ঠিকই বাসার সামনে নেমে তাহাতে ১০ টাকা ধরিয়ে দিলেন। বেচারা রিক্সাওয়ালা আকুতির স্বরে বললেন “মাত্র ১০ টি টাকা দিলেন?!!”
তার কথা শেষ হয়ে পারেনি, অতি চালাক ভদ্রমহোদয় (!) জবাবে পাল্টা জিব্বা আঘাত করলেন। বললেন ১০ টাকা নয় তো কী? সম্ভবত রিক্সাওয়ালা উক্ত লোকের অ্যাটিচিউড বা ভাবমূর্তি মতি গতি দেখে আর কোনো জবাব না দিয়ে টাকা আস্তে করে পকেটে রেখে পিছন দিকে ফিরে গেলেন। চলে গেলেন বাড়ির দিকে।
এই যে কষ্ট পাবে, মন থেকে যে বদদোয়া দিবে, সে কথা তো অন্য কথা। কিন্তু লোকটা যখন শ্বশুরবাড়িতে যান, শালীদের মন রক্ষা করতে হাজার টাকা দিয়ে দেন, শপিংমলে গেলে হাজার টাকা অংকে ছাড়িয়ে যায়, ”একটু আধতু খরচ হবে “ বলে মনকে বাহবা দেন।্র এনারা মূলত 'শক্তের ভক্ত নরমের যম'.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
‘তোমরা শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ করো তার ঘাম শুকানোর আগেই’ (বায়হাকি, মিশকাত)। যারা শ্রমিকের মজুরি আদায়ে টালবাহানা করে, তাদের সাবধান করে বলেছেন, ‘সামর্থ্যবান পাওনা পরিশোধে গড়িমসি করা জুলুম বা অবিচার’ (বুখারি)।
হাদিসে কুদসিতে আছে- আল্লাহতায়ালা বলেন,
‘কিয়ামতের দিন আমি তাদের বিরুদ্ধে থাকব, যারা বিশ্বাসঘাতকতা করে, মানুষকে বিক্রি করে এবং ওই ব্যক্তি যে কাউকে কাজে নিয়োগ করল, অতঃপর সে তার কাজ পুরোটা করল; কিন্তু সে তার ন্যায্য মজুরি দিল না’ (বুখারি)।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন