প্রেম, ভালোবাসা ও বিবাহ, বৈধ অবৈধ ও তাঁর সমাধান - পর্ব ২ (শেষ পর্ব)
আসসালামু আলাইকুম, আপনাদের সবার জন্য নিয়ে আসলাম আমার আর্কাইভ থেকে একটা পছন্দের পোষ্ট। এটি ২য় পর্ব। আজকের বিষয়- প্রেম, ভালোবাসা ও বিবাহ, বৈধ অবৈধ ও তাঁর সমাধান।
আগের পর্ব (১) এখানে
এক/১ নাম্বার পয়েন্টের সমাধানঃ |
...............
সমাধানঃ. . .এই ভালবাসা হলো আল্লাহকে ভালবাসা. দুনিয়ার কারো প্রতি টান থাকলে সেই কারণ টা হবে “আমি ও নামাজী, সেও নামাজী তাই তাঁর প্রতি টান। আমি ও রোজাদার, সেও রোজাদার তাই তাঁর প্রতি টান” এরকম হবে, কাউকে ভালোবাসলে আল্লাহর কারনেই ভালোবাসা। এটা বলেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আর আলেমগন বলেন “যদি এমন হয় যে - যখন কেউ আমার মত মতো চলে, আমার দল বা হুজুরকে ভালোবাসে তখন তাকে আমি ভালো বাসি, আর সে আল্লাহ ও রাসুল (সঃ) এর হুকুম মত চলে কিন্তু আমার দল বা আমার হুজুরকে ফলো করেনা তাকে ভালোবাসিনা, তাহলে বুঝতে হবে - আমার মনে আল্লাহর চেয়ে অন্য কিছুর ভালোবাসা বেশি আছে”।
সমাধানঃ ইসলাম আপনাকে পছন্দ করতে নিষেধ করেনি, কিন্তু বিবাহ পুর্ব আলাপন, দেখা ডেটিং নিষেধ করে। হয়তো বলবেন – আমরাই তো বিয়ে করবও। না অনেক আছে যারা ৫-১০ বছর প্রেম করের পরও বিয়ে হয়ন। হবে কিভাবে? বিবাহ তো আল্লাহর বন্টন ও লিখন, তিনিঈ জানেন আসলে আমি কার জন্য ভালো ও কে আমার জন্য ভালো। আমার মনে হয় ও ভালো কিন্তু আসলে সে খারাপ হবে কিনা আমি জানিনা , আল্লাহ জানেন, আর আল্লাহর নিজের হাতে না থাকলে আপনার ইচ্ছায় কি বিয়ে হবে? আর লেখা থাকলে কি আপনার ইচ্ছায় বিবাহ ভাংবে? তাই আগে আগে যা করছেন বিয়ের পর সেইটা করলে (মন দেয়া নেয়া) সব দিক থেকে ভালো হয়।
# তাছাড়া দেখবেন --- প্রেম করে বিবাহের ঘর ভাঙ্গার সংখ্যা বেশি ও অনেক বেশি, বিদেশে তো ৯০-৯৯ পার্সেন্ট বলা যায়, আর প্রেম বাদে বিবাহের ঘর ভাঙ্গার সংখ্যা ০-৫ পার্সেন্ট। নাই বললেই চলে। এর কারণ হিসেবে ১ টাই কারণ পাওয়া যায় – আমাদের অভিজ্ঞতা নাই, মা বাবার অভিজ্ঞতা আছে। তাঁরা বোঝেন কোন ধরনের মেয়ে বা ছেলে কোথায় ভালো। তাই আমাদের পছন্দের পাশাপাশি মা-বাবার মত এক হওয়া দরকার। হাদিসেও সেই কথাই এসেছে। পছন্দ করতে বা দেখে নিতে বলা
হয়েছে। আর মা বাবার অনুমতির বিষয় ও এসেছে বহুবার।
................
তিন/
৩ নাম্বার পয়েন্টের সমাধানঃ
.
সমাধানঃ কেউ নিজকে মুসলিম দাবি করলে তার সেইটা করা উচিত যেই প্রকার টা রাসুল [সঃ] করে দেখিয়েছেন, রাসুল [সঃ] কে মুখে দাবি করি যে ভালোবাসি, কিন্তু কাজ একটাও
তাঁর মত করিনা, এটা মেকি ভালোবাসা। এটা আবু তালিবের মত ভালো বাসা। আর সবাই ই জানেন
আবু তালিবের সেই ভালোবাসা গ্রহনীয় নয়। । অনুসরণ ও অনুকরণ ই ভালোবাসার দাবি - এটাই
বাস্তব। একারণেই ইমাম বুখারী রহঃ, ইমাম মুসলিম, ইমাম তিরমিজি, নাসির
উদ্দিন আলবানী, ইমাম আজম রহঃ, ইমাম শাফেয়ী রহঃ
সহ কোটি আলেম গনের শত কস্ট - শত শ্রম, জীবন সাধনা শুধু সহীহ হাদীস সংগ্রহ,
প্রচারের জন্য।
একটা হাদীস যিনি বর্ণনা করেছেন তা তিনি কার কাছে থেকে
শুনলেন, তিন কার কাছে থেকে - তিনি কার কাছ থেকে.........এভাবে বর্ণনা রাসুল (সঃ)
পর্যন্ত সঠিক ভাবে গেলেই তাঁর হাদিস টা সহীহ কিতাবে লেখা হয়েছে, ভেতরে কেউ বাদ
গেলে, বা নিজের শিক্ষক নয় এমন কারো থেকে শোনা
হাদিস টাও সহীহ হাদীসে আসেনি। এই ধারা কে সনদ বলে। (আমরা বাঞালি রা হাদীস ই
পড়তে চাইনা আর সনদ পড়া, বিভিন্ন দেশে সনদ সহ হাদীস পড়ানো শেখানো হয়)।
কেন এত
কিছু? কারণ - যাতে একমাত্র রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কে হুবহু অনুকরণ অনুসরণ করা যায়, এর ফলে তাঁর প্রতি ভালবাসার প্রমান
রাখা যায়। মনে রাখবেন – যে কাজটা হাদিসে
পাওয়া যায়না সেই কাজ যতই ভালো দেখাক, তা করে রাসুল (সঃ) এর প্রতি ভালোবাসা প্রমান
করা যায়না, তা করে নিজের নফসের প্রতি ভালোবাসা প্রমান করা যায়। এমনকি যে কাজ হাদিসে
আছে কিন্তু সেই কাজ পালনের যে পদ্ধতি
হাদিসে পাওয়া যায়না, সেই পদ্ধতিতে (নিজের বানানো পদ্ধতিতে) কাজ করেও রাসুল (সঃ) এর
প্রতি ভালোবাসা প্রমানিত হয়না। যেমন – কেউ মরে
গেলে খানা খাওয়ানো হাদীসে নাই, এটা করে ভালো দেখালেও শরিয়তের
ভালোবাসা বলা যাবেনা। আবার হাদিসে দরুদ
পড়ার কথা আছে, কিন্তু
সমবেত হয়ে কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে সমস্বরে পড়ার নিয়ম নাই, জিকির, কুরআন
তেলাওয়াত ও তাই, নাই।।
এসব অনেক সাহাবী এক জায়গাতে পড়েছেন কিন্তু
যার যার মত নিজে নিজে পড়েছেন। হাদিসে জিকিরের কথা আছে কিন্তু তাঁর
জন্য আলাদা মজলিসে, একত্র ভাবে, নেচে লাফিয়ে পড়া নিয়ম । অর্থাৎ
করতে হবে ই বলে শরিয়ত থেমে যাইনি, কিভাবে করতে হবে, কতটূকু, কখন সকল নির্দেশোনা
দেওয়া ছে। যেমন পানি খাওয়ার ৭ নিয়ম আগেই
উল্লেখ করেছি। শুধু দলিল খুজলে হবেনা, কিভাবে তাঁরা পালন করেছেন সেইটাও খুজতে হবে।
সমাজে যে কাজের যে সিস্টেম দেখবেন তাও হাদিসে সরাসরী মিলিয়ে দেখতে হবে,
তাহলে আমরা সঠিক ভাবে অনুসরণ অনুকরণ করতে
পারব। সবাইকে ধন্যবাদ।
You Can Follow this Video for more knowledge:
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন